শিরোনাম
Passenger Voice | ০৩:৪১ পিএম, ২০২৪-০৪-২৫
প্রচণ্ড গরমে শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কে বিভিন্ন স্থানে বিটুমিন গলে যাচ্ছে। শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জের বালিবাড়ির মোড় থেকে নরসিংহপুর ফেরিঘাট পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটারের অন্তত ১৫টি স্থানে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। গত বছর জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সড়কের ওই অংশ সংস্কার করা হয়েছিল। এদিকে বিটুমিন গলে যাওয়ায় সড়কে দুর্ঘটনা এড়াতে ধীরগতিতে যানবাহন চালাচ্ছেন চালকেরা। এ ছাড়া পাথর সরে গিয়ে সড়ক দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের শরীয়তপুর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত এক সপ্তাহ ধরে শরীয়তপুরে তাপমাত্রা ৩৭ থেকে ৪০ ডিগ্রির মধ্যে রয়েছে। প্রচণ্ড রোদে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় সড়কে যানবাহন চলাচলে সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে সড়কে বিটুমিন গলে যাওয়ার তথ্য তাঁদের কাছে নেই।
এ সম্পর্কে বুধবার (২৪ মার্চ) রাতে সওজের শরীয়তপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসেন বলেন, ‘সড়কের বিটুমিন গলে যাওয়ার তথ্য এখনো পাইনি। এ বিষয়ে আমাদের কর্মীরা খোঁজখবর নিয়ে সড়কের ওই সব স্থান শনাক্ত করবেন। দাবদাহ কমে গেলে ওই সব স্থানে আরেক লেয়ার বিটুমিন দেওয়া হবে।’
শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়ক দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যানবাহন চট্টগ্রাম অঞ্চলে চলাচল করে। মেঘনা নদীর তীরের ভেদরগঞ্জের নরসিংহপুর ফেরিঘাট থেকে সদর উপজেলার মনোহর বাজার পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য ৩১ কিলোমিটার। সড়কটিকে চারলেনে উন্নীতকরণের জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। গত বছর জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ভেদরগঞ্জের বালিবাড়ির মোড় থেকে নরসিংহপুর ফেরিঘাট পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার বিটুমিন দিয়ে কার্পেটিং করা হয়। এতে ব্যয় হয় ৪৪ কোটি টাকা। গত দুই দিন সড়কের ওই ১৫ থেকে ২০ অংশে বিটুমিন গলে যাচ্ছে।
২৪ মার্চ বিকেল চারটার দিকে গিয়ে দেখা যায়, ভেদরগঞ্জের বালিবাড়ির মোড় থেকে খায়েরপট্টি পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেজা। যে স্থানে গাছের ছায়া রয়েছে সেখানে সড়ক স্বাভাবিক। যে অংশে রোদ পড়েছে, সেখানে সড়কের বিটুমিন গলে সড়ক ভিজে উঠেছে। সেখানে গাড়ি চলাচল করলে টায়ারে বিটুমিন লেগে যাচ্ছে। ওই স্থানে যানবাহন ধীরগতিতে চলছে। ছোট যানবাহন বিশেষ করে মোটরসাইকেল, রিকশা, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক বিটুমিন উঠে যাওয়া অংশ এড়িয়ে চলাচল করছে।
ভেদরগঞ্জের চরকুমারিয়া এলাকার সিরাজুল ইসলাম উপজেলা সদরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। মোটরসাইকেলে করে তিনি ওই সড়কে যাতায়াত করেন। তিনি বলেন, ‘সড়কের বিটুমিন গলে যাওয়ার বিষয়টি মঙ্গলবার আমার নজরে পড়েছে। নারায়ণপুর এলাকা অতিক্রম করার সময় হঠাৎ সড়ক ভেজা দেখতে পাই। ওই ভেজা অংশে মোটরসাইকেলের চাকার সঙ্গে বিটুমিন আটকে যায়। পড়ে যাওয়ার ভয়ে আমি সড়কের অন্য অংশ দিয়ে চলাচল করছি।’
চাঁদপুর-শরীয়তপুর সড়কে নিয়মিত মাইক্রোবাস চালান দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘চাঁদপুর-শরীয়তপুর সড়কের অন্তত ১৫টি স্থানে বিটুমিন গলে যাচ্ছে। ওই স্থানে গাড়ির চাকা পড়লেই তা আটকে যাচ্ছে। সতর্কতার সঙ্গে ওই স্থানগুলো দিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে।’
সাতক্ষীরা থেকে খাদ্যপণ্য নিয়ে চট্টগ্রামে যান ট্রাকচালক আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, ‘শরীয়তপুরের মনোহর বাজার এলাকায় আসার পর অন্য চালকদের কাছে জানতে পেরেছি সড়কের কিছু অংশের বিটুমিন গলে যাচ্ছে। ওই ১৭ কিলোমিটার পথ ধীরগতিতে গাড়ি চালিয়ে ফেরিঘাটে পৌঁছেছি।’
সওজের শরীয়তপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসেন বলেন, অতিরিক্ত তাপমাত্রায় দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়কের বিটুমিন গলে যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন সড়কে ৬০ থেকে ৭০ গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার করা হয়, যা ৪৯ থেকে ৫৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সহনীয়। পাকা সড়কে বাতাসের তাপমাত্রার চেয়ে ২০ ডিগ্রি তাপমাত্রা বেশি ধরা হয়। বর্তমানে দেশের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি অতিক্রম করেছে। এখন সড়কে ৮০ থেকে ১০০ গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার করা হবে।
প্যা/ভ/ম
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2019 - 2024 PassengerVoice | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Developed By Muktodhara Technology Limited.